কমলগঞ্জ বার্তা ডেস্ক, রিপোর্ট ॥মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের নারী শ্রমিক কমলা বেগম ঝড়ের মাঝে প্লান্টেশন এলাকা থেকে উত্তোরিত চা পাতা নিয়ে ফেরার সময় পড়ে গিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিলেন। তিনি ও তার একমাত্র ছেলেও কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। চা বাগানে ঘর থেকেই নেই সেখানে আশ্রয়। ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে ঘুরে বেড়ায় যেখানে সেখানে। আর অসুস্থ্য নারী কমলা বেগমের এখন আশ্রয় হয়েছে পাত্রখোলা চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায়। তবে কেই রাখে না তার কোন খোঁজ। শনিবার (৯ মে) দুপুরে দেখা মেলে অসুস্থ্য নারী চা শ্রমিক কমলার সাথে। তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বলেন পাত্রখোলা চা বাগানের নারী শ্রমিক ছিলেন। এক ইউপি নির্বাচনে তিনি মাধবপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্ধীতা করেছিলেন। দুই বছর পূর্বে এক ঝড়ের সময় প্লান্টেশন এলাকা থেকে উত্তোলিত চা পাতা নিয়ে ফেরার সময় পড়ে গিয়ে কোমরে বড় ধরনের চোট পেয়ে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। চা বাগানের পিচ্ছিল পথই তার জীবনটাকে তছনছ করে দিয়েছে। এর পর থেকে আর কাজ করতে পারেন না। একমাত্র ছেলে সিদ্দিকও মানসিক ভারসাম্যহীন। পাত্রখোলা চা বাগানের নতুন লাইনে তার একটি ঘর ছিল। সে ঘরটিও দরজা জানালাবিহিন জরাজীর্ণ। চা বাগান কর্তৃপক্ষও তার কোন খোঁজ রাখে না। গত ৪ দিন ধরে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছেন। কেই খাবার দিলে খান নতুনা অনাহারে থাকেন। তার আর্তনাদ এখন পৌছে না চা বাগানের বাবু (কর্মচারী) শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও চা বাগান ব্যবস্থাপকের। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় বারান্দায় বড় অসহায় অবস্থায় অসুস্থ্য নারী কমলা বেগম। কোন কিছু খেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে অসুস্থ্য নারী চা শ্রমিক কমলা বেগম হাউমাউ করে কেঁদে উঠে তার অসুস্থ্য ছেলের নাম সিদ্দিক সিদ্দিক বলে ডাকতে শুরু করেন। এর পর কমলা তারের তার জীবনের অনেক সংগ্রামের কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন জনপ্রতিনিধি ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরাও এখন তার কোন খোঁজ রাখেনা। তিনি বলেন, মুসরিম চা শ্রমিক বলেই হয়তো তার উপর এত অবহেলা। পাত্রখোলা চা বাগান ব্যবস্তাপক কমলা বেগম এ চা বাগানের নারী শ্রমিক ছিলেন স্বীকার করে বলেন,তিনি পুরোটাই পাগল। গত২ বছর আগে একটি দূর্ঘটনায় সে অসুস্থ্য হয়ে এখন মানসিক ভারসাম্যহীন। আমি তাকে ৬ মাস সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করিয়েছি। তার ঘর রয়েছে তবে সে ঘরে তিনি থাকেন না। তাকে বার বার বলার পরও তিনি সে ঘরে যেতে রাজি নন। তারপরও তাকে নিজ ঘরে ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করা হবে বলে জানান। মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু কমলা বেগমের অসুস্থ্যতার কথা ও এখন প্রাথমিক বিদ্যালয় বারান্দায় অবস্থানের কথা নিশ্চিত করে বলেন, তার ঘরটি মেরামত করে সে ঘরে তাকে ফিরিয়ে নিতে চা বাগান ব্যবস্থাপককে তিনি বলেছেন। যেহেতু কমলা বেগম অসুস্থ্য চা বাগানের তার নামটি তার এক ছেলেছে দিতে বলেছেন। চেয়ারম্যান পুষ্প কানু আরও বলেন এই নারীর আরও একটি ছেলে রয়েছে।