সৈয়দ ময়নুল ইসলাম রবিন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াস নগরে ২৫ বছর বয়সী এক গৃহবধূ ৫ বছরের এক পুত্রসন্তান সহ উধাও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়,প্রায় ৭ বছর আগে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর গ্রামের মৃত মোঃ রহমত উল্লাহর ছেলে মোঃ সাইমুল্লাহ এর সাথে একই ইউনিয়নের নিতেশ্বর (মোকামবাজার)গ্রামের মোঃ জালাল মিয়ার মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার (২৫) এর পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় দুই বছর পর সাইমুল্লাহ ও ইয়াসমিন দম্পতির সংসার আলো করে একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করে,এর পর থেকে শাশুড়ী বাচ্চা ও স্বামী নিয়ে খুব সুন্দর ভাবে চলছিলো ইয়ামিনের সাজানো ছোট্ট এই সংসার। সাত বছরের সাংসারিক জীবনে তাদের মধ্যে কখনো কোনো ঝামেলা হয়নি বলে জানান আশপাশের লোকজন।
সাইমুল্লাহ ও তার মা জানান,যেদিন ইয়াসমিন বাড়ি থেকে ৫ বছরের পুত্র শিশু কে নিয়ে বেড়িয়ে যান সেদিন ছিলো ২৭/১১/২০২০ রোজ শুক্রবার,
ইয়াসমিনের স্বামী সাইমুল্লাহ পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী টিকাদার তিনি কাজের সাইট দেখে আসার জন্য বাড়ির বাইরে ছিলেন এবং শাশুড়ী নুরজহান বিবি (৬০) গোসল করতে পাশের বাড়ির পুকুরে ছিলেন এবং ঘরে ছিলেন স্বামীর ঘর থেকে বেড়াতে আসা ননদ পারুল বেগম,সে সময় ইয়াসমিন পারুল বেগমকে বলেন তিনি তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন আবার বিকেলে ফিরে আসবেন বলে ৫ বছর বয়সী পুত্র শিশু ইকরাম আলী কে সাথে নিয়ে বাবার বাড়ি নিতেশ্বরের (মোকামবাজার) উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যান। এর পর শাশুড়ী গোসল থেকে এসে জিজ্ঞেস করেন ইয়াসমিনের কথা তখন ইয়াসমিনের ননদ পারুল বেগম বলেন কেন তিনি ত তার বাবার বাড়ি চলে গেছেন তুমাদের কে আগে বলেননি? তখন নুরজাহান বিবি বলেন না আমিতো আগে কিছু জানিনা,এরপর জুম্মার নামাজ শেষে ইয়াসমিনের স্বামী সাইমুল্লাহ ঘরে আসলে জানতে পারেন তার স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে তাকে কিছু না বলেই তার বাবার বাড়ি বেড়াতে গেছে, তখন তিনি স্ত্রী’র মোবাইল ফোন উক্ত নাম্বারে ০১৭৬৩-৮৭৭২৩৬ এ বারবার কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি তখন সাইমুল্লাহ তার শশুর বাড়ি নিতেশ্বরে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী সন্তান সেখানেও নেই তখন তার (সাইমুল্লাহর) শাশুড়ী রায়না বেগমকে জিজ্ঞেস করলে শাশুড়ী রায়না আমতাআমতা করে বলেন তিনি জানেননা হয়তো কোথাও বেড়াতে গেছে আবার চলে আসবে এনিয়ে চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়ে সাইমুল্লাহ কে তার বাড়িতে ফিরে যাবার জন্য বলেন সাইমুল্লাহর শাশুড়ী রায়না বেগম। তখন সাইমুল্লাহ শাশুড়ীর কথামতো বাড়ি ফিরে আসেন এবং স্ত্রীকে ফোনে কল অব্যাহত রাখেন একপর্যায়ে রাত ৯ টার পর থেকে ইয়াসমিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায় যা আজ-অব্দি বন্ধ রয়েছে।
বিষয়টি জানতে সরেজমিন সাইমুল্লাহর শশুর বাড়ি নিতেশ্বর (মোকামবাজার) গেলে ইয়াসমিনের বাবার বাড়ির কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ইয়াসমিনের মা দ্রুত নিজের বাড়ি থেকে পাশের বাড়ি চলেযান অন্য ঘরের লোকজন কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি।
সাইমুল্লাহ আরো জানান, কোনো উপায় না পেয়ে পরের দিন সাইমুল্লাহ তার মা নুরজাহান বেগম কে সাথে নিয়ে ইয়ামিনের বাবার বাড়ি নিতেশ্বরে যান এবং তার স্ত্রী সন্তানের বিষয়ে জানতে চান তখন তার শাশুড়ী রায়না বলেন আমরা কি জানি কোথায় আছে হয়তো কোনো আত্মীয় বাড়ি গেছে দু’একদিন পরে ফিরে আসবে আর ফোনে হয়তো চার্জ নেই তাই বন্ধ হয়ে গেছে। এইরকম কথাবার্তায় সাইমুল্লাহ কোনো ভরসা না পেয়ে ঘটনার দুইদিন পরে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য তার এক মামাকে নিয়ে আসেন মৌলভীবাজার মডেল থানায় তখন থানা ফটকের ভিতর থেকে ইয়াসমিনের বড়বোনের মামা শশুর হেলাল মিয়া তাদেরকে জিডি বা মামলা না করার জন্য পরামর্শ দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যান এবং চার পাঁচ দিনের ভিতরে সাইমুল্লাহর স্ত্রী’সন্তানকে খুঁজে এনে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু এরপর আজকাল করে প্রায় দেড়মাস অতিবাহিত হলেও আজও ফিরে আসেনি ইয়াসমিন ও ইকরাম। সাইমুল্লাহর চাচা বলেন আমরা একই বাড়িতে থাকি আজ পর্যন্ত তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া হয়নি কারণ ইয়াসমিন যা চায় তাই এনে দেয় সাইমুল্লা,সে যা রোজকার করে তার সবকিছুই ইয়াসমিনের হাতে তুলে দেয়,তবে কিছু দিন আগ থেকে ইয়াসমিন প্রায় সবসময় মোবাইলে কার সাথে কথা বলতো জানিনা তবে এর আগে কখনো এতো কথা বলতে দেখেনি বাড়ির কেউ,আশপাশের কয়েকজন নারী ও পুরুষ বলেন ইয়াসমিন খুব সুন্দরী ও শান্ত মেয়ে ছিলো কিন্তু আজ কয়েকমাস যাবৎ সবসময় মোবাইলে ব্যাস্ত থাকতো যা সাইমুল্লা জানতোনা,তাছাড়া সাইমুল্লাহ এতোটাই সরল যা পুরো এলাকার মানুষ জানেন তিনি বৌয়ের কোনো কথায় না বলতেন না,বৌ (ইয়াসমিন) যে ভাবে বলতো সেভাবেই সে চলতো,হয়তো যার সাথে কথা বলতো তার কোথাও পালিয়ে গেছে,কারণ ইদানীং ইয়াসমিনের চলাফেরায় অনেক পরিবর্তন দেখা গেছে।যে ইয়াসমিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সেদিন এবং এর আগের দিন সাইমুল্লাহর বাড়ির আশপাশে একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে এ-থেকে আমরা অনুমান করছি হয়তো সে কারো সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত ছিলো এবং সুযোগ বুঝে পালিয়ে গেছে।
পালিয়ে যাবার বিষয়টি সাইমুল্লা মানতে নারাজ তিনি বলেন এতোদিনের সংসার ভেঙে ইয়াসমিন অন্য কারো সাথে পালিয়ে যাবে তা আমি বিশ্বাস করিনা। প্রশাসনের কথা বললে সাইমুল্লা বলেন,কোথাও খুঁজ না পেয়ে আমার এক আত্মীয়কে সাথে নিয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যাই ওসি সাহেব তদন্ত করে জিডি করবেন বলে আমাকে চলে যেতে বলেন। প্রায় একসপ্তাহ হয়ে গেলো আজও জিডির কোনো কপি আমি না পেয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইয়াছিনুল হকের সাথে মোটো ফোনে কথা হলে তিনি জানান,বিষয়টি তদন্তের জন্য একজন উপপরিদর্শকে দিয়েছি তার সাথে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারবেন, তখন কথা হয় (যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে) মৌলভীবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এস আই) আজিজুর রহমান নাইম এর সাথে তিনি বলেন,আসলে প্রকৃত ঘটনা আমরা এলাকার অনেকের কাছ থেকে জানতে পেরেছি মহিলা (ইয়াসমিন) তার বাচ্চা সহ কারো সাথে পালিয়ে গেছে,তাই এটা মামলা করতে হবে জিডি করলে হবেনা। এতে করে ভুক্তভোগী সাইমুল